বোয়ালমারী প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এক মৎস্য ব্যবসায়ীকে চুরি মামলায় গ্রেফতারের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক জল্পনা কল্পনার পাশাপাশি ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বোয়ালমারী বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ীরা আধারকোঠা মোড়ে সোমবার (১ আগস্ট) রাত ৮টায় নৃপেনের মুক্তি চেয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিত্ব নিখিল রাজবংশীর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সাইফুল ইসলাম স্বপন, আ’লীগ নেতা মোঃ মাসুদুর রহমান মাসুদ, মহিলা কাউন্সিলর মোসা. নীরা বেগম, পৌর স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি মনির হোসেন, মৎস্য ব্যবসায়ী নারান রাজবংশী, নিঠুর রায়, বিশ্বজিৎ রাজবংশী, ভুক্তভোগী নৃপেন সরকারের স্ত্রী সুজলা সরকার, ভাই ডালিম সরকার ও ছেলে সাগর সরকার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, নৃপেন সরকার বোয়ালমারী বাজারের একজন প্রতিষ্ঠিত মৎস্য ব্যবসায়ী। তিনি বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। সব মিলিয়ে বোয়ালমারী পৌর সদরে সজ্জন মানুষ হিসাবে সুপরিচিত তিনি। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় আসামী করে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছে।
নৃপেন সরকারের স্ত্রী সুজলা সরকার কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার কিসের অভাব যে আমার স্বামী চুরি করতে যাবেন? ভালো আছি বলেই অনেকে সহ্য করতে পারছে না। চুরি হওয়া মৃধা ফার্মেসির মালিক হিরু মৃধার পরিবারের সাথে আমাদের পূর্ব বিরোধ রয়েছে। আমাদের হেনস্থা করতে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমার স্বামী নৃপেন সরকারে মাছের পাইকারী ব্যবসা করেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মাছ আমদানি করে স্থানীয় পর্যায়ে সরবরাহ করে থাকেন। মাছের গাড়ি আসতে অনেক রাত হয়। ফলে ব্যবসায়িক প্রয়োজনেই তাকে গভীর রাতে বাজারে যাতায়াত করতে হয়। যে কারণে আজ তাকে চুরির অপবাদ মাথায় নিতে হয়েছে। যে রাতে মৃধা ফার্মেসিতে চুরি হয়, সেই রাতে নৃপেনও মাছের গাড়ির অপেক্ষায় বাজারে পায়চারী করছিলেন। সেই চিত্র সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখে আমার স্বামীকে চোর সাব্যস্ত করা হয়েছে।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, রাতে কোন মানুষ জরুরি প্রয়োজনে বাজার-ঘাটে গেলেই কি সে চোর হয়ে যাবে? এখানে ভালো-মন্দ বলে কি কোন বিচার-বিবেচনা নেই। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ স্বামী নৃপেন সরকারের মুক্তি চেয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
উল্লেখ, গত ২৪ জুলাই বোয়ালমারী বাজারে মৃধা ফার্মেসি নামে একটি ঔষধের দোকানে তালা ভেঙে চুরির ঘটনা ঘটে। এরপর বাজারের সিসি ক্যামেরায় ওই রাতে নৃপেন রাজবংশীর আনাগোনার দৃশ্য দেখে কর্তৃপক্ষ ২৮ জুলাই নৃপেনকে জড়িয়ে বোয়ালমারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ৩১ জুলাই রবিবার নৃপেনকে আটক করে ফরিদপুর আদালতে প্রেরণ করেন।