মধুখালী প্রতিনিধি: ০৪ মে  বৃহস্পতিবার দুপুরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘরবাড়ি নির্মাণ নিয়ে জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন চলাকালে আনসার সদস্যরা ব্যানার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা। বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষ। এলাকাবাসীর হামলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও সহ উভয় পক্ষের ৮জন আহত হয়েছে। সরকারি গাড়ি ভাংচুর।  আজ বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
আহত ইউএনও মো. আশিকুর রহমান চৌধুরীকে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সামনে শাপলা ডায়েগস্টি সেন্টরে চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাপতালে স্থনান্তর করা হয়েছে। বাকিরা মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এলাকাবাসী জানায়, ওই গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্প করার জন্য একটি জায়গা দেখা হয়। জায়গাটি বর্তমানে বিএস রেকর্ডে সরকারি খাস হলেও এস এ রেকর্ডে ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমি। এ নিয়ে এলাকাবাসীর সাথে স্থানীয় প্রশাসনের বিরোধ চলে আসছিল।
বুহস্পতিবার দুপুরে এলাকার মহিলারা ওই জমির মালিকানা তাদের দাবি করে এবং আশ্রয়ণ প্রকল্পের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছিলেন। এ খবর পেয়ে ইউএনও ৪জন আনসার ও ৫জন পুলিশ সদস্যদের নিয়ে সেখানে যান।
আনসার সদস্যরা নারীদের কাছ থেকে মানববন্ধনের ব্যানার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় নারীদের সাথে ধস্তাধস্তি হয়। আনসার সদস্যরা রাইফেলের বাট দিয়ে কয়েক নারীকে আঘাত করেন। এক পর্যায়ে আইরিন বেগম (৪০) নামে নারী আহত হন। পরে নারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে গাছের ডাল ভেঙ্গে আনসার সদস্যদের উপর হামলা চালায়। এসময় স্থানীয় মাইকেও ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। এসময় ইউএনও ও কয়েকজন আনসার সদস্য আহত হন। ওই সময় আনসার সদস্যরা শর্টগানের তিন/চারটি গুলি ছুড়ে। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ইউএনওর গাড়ি ভাংচুর করে। পরে মধুখালী থানার পুলিশ  ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ্ আসাদুজ্জামান তপন বলেন, তিনি একটি শালিসে ছিলেন। তিনি জানতেন না ইউএনও স্যার ওই এলাকায় এসেছেন। পরে ইউএনরও সাহেবের ফোন পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সহকারি পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) সুমন কর জানান, পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। পরে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার ঘটনাস্থলে আসেন।
আহত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আশিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের নিশ্চিন্তিপুর গ্রামে ঘড় নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এর পর স্থানীয় জমির মালিকদের সাথে আলোচনা করি গত দুই মাস যাবৎ। কিছু জমিতে এস এ রেকর্ডে ব্যক্তি মালিকানায় থাকলে ওই জমিগুলো বাদ দিয়ে সরকারি খাস খতিয়ান ভূক্ত জমিতে আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ঘর নির্মাণের জন্য একটি ছাপড়া তৈরি করে। সে ঘরটি ভেঙ্গে ফেলে শুনতে পায়। ঘটনার দিন আমি ৪জন আসনার ও ৫জন পুলিশ সদস্য নিয়ে এলাকায় যায়। একটি বড় ধরণের মানববন্ধন বা সমাবেশ দেখি। এতবড় সমাবেশ ও মানববন্ধন হচ্ছে এটা আমি অনুধাবন করতে পারি নাই। এ ঘটনায় আমিসহ আমাদের ৪জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করা হবে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ইউএনওর বাম চোখে আঘাত লেগেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার ক্ষতস্থানে সেলাই করে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে অসা হয়েছে। তিনি বলেন, পুলিশ সুপারও মো. শাজাহান ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন্। পুলিশ অভিযান শুরু করবে।