বোয়ালমারী প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাতের আধারে অন্যের জমিতে পাকা স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার শেখর ইউনিয়নের দীঘিরপাড় গ্রামে এ কুকীর্তি স্থাপন করছেন বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগে কর্তব্যরত আপন ৪ সহদর কাজী শাহিনুর ইসলাম, কাজী নজরুল ইসলাম, কাজী শরীফুল ইসলাম ও কাজী সাইফুল ইসলাম গং। তাদের এই বেআইনী দখল জজ্ঞ ঠেকাতে বার বার থানা, আদালতে দৌড়ঝাঁপ করতে গিয়ে রীতিমতো কাহিল হয়ে পড়েছে একটি ভুক্তভোগী পরিবার।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ১৩৫ নং দীঘিরপাড় মৌজার ৪৩০/৪৩১ নং দাগের ২০ শতক জমির মালিকানা ও দখল সত্ত¡ নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকাসহ থানায়ও দরখাস্ত পড়েছে একাধিকবার। দলিল ও রেকর্ড মূলে জায়গাটির মূল মালিকানার দাবীদার কাজী আবু সামার গং। কিন্তু পূর্বের একটি সাদা কাগজের বণ্টক নামার মূলে জমিটি ভোগ দখলের চেষ্টা করছেন অভিযুক্ত ওই চার ভাই অর্থাৎ কাজী শাহিনুর ইসলাম গং। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে তারা সুকৌশলে নানা অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ। প্রথমে তারা একটি টিউবওয়েল স্থাপনের মধ্য দিয়ে জায়গাটি জবর দখলের সূচনা করেন। এরপর জায়গাটির একটি অংশ জুড়ে নির্মাণ করেন বিল্ডিং। এসব নিয়ে প্রতিপক্ষের ঘোর আপত্তি থাকলেও কোন কর্ণপাত করেননি প্রভাবশালী দখলদার চার ভাই। মানেননি গ্রাম্য শালিস বৈঠকের সিদ্ধান্তও। তৃতীয় ধাপে অর্থাৎ বিগত জুন মাসে মালিকানা সংক্রান্ত বিতর্কের মধ্যেই পুরো জমিটির দখল নিয়ে সেখানে দোতলা ভবনের ফাউন্ডেশন নির্মাণের কাজ শুরু করেন বিবাদীরা। এ সময় আদালতের শরণাপন্ন হন বাদী কাজী আবু সামার গং। জমিটির উপর ১৪৪ ধারা জারি করেন আদালত। তবে এতে থেমে যাননি শক্তিশালী বিবাদীরা। তারা কৌশলে রাতের আঁধারে কলাম ঢালাইয়ের কাজ সেরে ফেলেন। পরে থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে কাজ বন্ধ রাখেন অভিযুক্তরা। বর্তমানে ওই জমিতে ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকলেও সেটিকে পাশ কাটিয়ে স¤প্রতি এক রাতে বিরোধপূর্ণ জমির একাংশে একটি লোহার গেট নির্মাণ করেছেন বিবাদীগণ। দুর্বল প্রতিপক্ষের বাধা থোরাই কেয়ার করে এই স্থাপনা তৈরি এলাকায় নতুন করে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
ভুক্তভোগী কাজী আবু সামার বলেন, জমিটি আমার মায়ের নামে দলিল করে দিয়ে যান আমার নানা। সে মোতাবেক রেকর্ড পেয়েছি আমরা এবং ০৯/০৩/২০২১ ইং তারিখে বিজ্ঞ আদালতের রায়ও আমরা পেয়েছি। কিন্তু আদালতের রায় উপেক্ষা করে গায়ের জোরে আমাদের জমি জোরপূর্বক দখল করতে চায় আমার সৎ ভাই কাজী শাহিনুর গং। কাজী সামার আরও বলেন, তারা খুবই প্রভাবশালী। সৎ চার ভাইয়ের সবাই সরকারি চাকরীজীবি। একজন বিজিবি’র নায়েব সুবেদার, একজন পুলিশ বাহিনীতে, একজন শিক্ষাবোর্ডে আরেকজন পায়রা বন্দরে কর্মরত। তাদের অর্থ ও ক্ষমতার কাছে আমরা এমনকি এলাকাবাসীও অসহায়। তাই তারা কোন আইন-বিধিরও তোয়াক্কা করেন না। থানা-কোর্টে দৌঁড়াতে-দৌঁড়াতে কাহিল হয়ে পড়েছি। প্রতিপক্ষ কাজী শাহিনুর ইসলাম বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়।
প্রকাশক ও সম্পাদক : অ্যাডভোকেট কোরবান আলী
Copyright © 2025 Boalmari Barta. All rights reserved.