বোয়ালমারী প্রতিনিধি: গত ৭ অক্টোবর শুক্রবার দিনব্যাপী ‘বন্ধু সংঘ বোয়ালমারী’র নৌবিহার অনুষ্ঠিত হয়। নৌবিহারে বন্ধু সংঘের প্রায় অর্ধশত বন্ধু অংশগ্রহণ করেন। সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চলে এ নৌবিহারের কার্যক্রম। সকাল ৮টায় বোয়ালমারী বাজার সোনালী ব্যাংকের মোড় থেকে ইজিবাইকে যাত্রা শুরু করে ৯টায় মধুমতি নদীর চাঁদড়া ঘাটে পৌছান বন্ধু সংঘের সদস্যরা। ঘাটে ডিম-খিচুড়ি দিয়ে সকালের নাস্তা শেষে সকল বন্ধুরা উঠে পড়েন ট্রলারে। চাঁদড়া ঘাট থেকে একযোগে দু’টি ট্রলার কালনাঘাট/নবনির্মিত ৬ লেনের কালনা সেতু অভিমুখে যাত্রা শুরু করে। যাত্রা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে জমে উঠে বন্ধু সংঘের বন্ধুদের জম্পেশ আড্ডা। যৌথ ট্রলারের একটিতে নাচ, গান, আড্ডাবাজি আর অন্যটিতে চলে দুপুরের খাবার রান্নার আয়োজন। সেই সাথে কিছুক্ষণ পরপর মাঝ নদীতে বাবুর্চি টুটুলের রং চা আড্ডাবাজিতে নতুন মাত্রা যোগ করে। জুম্মার নামাজের জন্য দুপুর ১টায় ভাটিয়াপাড়া বাজার সংলগ্ন ঘাটে ট্রলার ভিড়ানো হয়। এ সময় অনেকেই নামাজ পড়তে যান আর কেউ কেউ নেমে পড়েন নদীতে গোসল করতে। প্রায় পৌনে এক ঘন্টা নামাজের বিরতি শেষে পুনরায় আবার যাত্রা শুরু। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই কাঙ্খিত গন্তব্য ৬ লেনের কালনা সেতুতে পৌছে যায় বন্ধু সংঘের যৌথ ট্রলার। দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনকারী উদ্বোধনের অপেক্ষামান নবনির্মিত কালনা সেতুর নিচেই ট্রলার ভিড়ানো হয়। তখন ঘড়িতে সময় দুপুর আড়াইটা। কালনা সেতুর নিচে ট্রলারের উপর বসেই চলে দুপুরের খাবারের তোড়জোড়। চমৎকার এ আয়োজনে দুপুরের খাবারের মধ্যে ছিল সাদা ভাত, সরিষা ইলিশ, মুরগির রোষ্ট, খাসির মাংস, দই, কোমল পানীয় ইত্যাদি। তৃপ্তি সহকারে খাওয়া দাওয়া শেষ করে আপ্যায়ন কমিটির আহবায়ক মহিবুল ইসলামকে ধন্যবাদ জানান উপস্থিত বন্ধুরা। এবার ফিরে আসার পালা।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কালনা সেতু থেকে যৌথ ট্রলারটি চাদড়া অভিমুখে যাত্রা শুরু করে। কিছুদূর যাওয়ার পর কাশবনে ঘেরা মধুমতির চরে ট্রলার ভিড়ানো হয়। এ সময় বোয়ালমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় বন্ধু সংঘের সাধারণ সম্পাদক কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের প্রভাষক মো. জাহিদুল হক পল্লব ও সুপ্রীমকোর্ট হাইকোর্ট ডিভিশনের আইনজীবি হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ায় বন্ধু সংঘের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য অ্যাড. বিপ্লব কুমার রায়কে বন্ধু সংঘ বোয়ালমারীর পক্ষ থেকে ফুলেল সংবর্ধনা জানানো হয়। সংবর্ধনা শেষে মধুমতির চরের কাশবনে চলে ফটোসেশন। আধঘন্টার বিরতি শেষে আবারও যাত্রা শুরু। সন্ধ্যায় আপেল, লেক্সাস বিস্কুট ও চমচম দিয়ে নাস্তা। এরপর রং চা তো আছেই। সন্ধ্যার আবছা আলোয় শরতের কাশবন আর জ্যোসনাময় মধুমতির আকাশের সৌন্দর্য্য ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছিল। সেই সাথে বন্ধু সংঘের সভাপতি দুলু চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক পল্লবের যৌথ উপস্থাপনা সকলকে মুগ্ধ করছিল। নাচ, গান আর হাস্যরসে মেতে উঠেছিল বন্ধু সংঘের সকল বন্ধুরা। যেনো কিছু সময়ের জন্য তারা ফিরে গিয়েছিল বাল্যকালের শৈশবে। হৈ-হুল্লোড় আর আনন্দ উল্লাস শেষে রাত সাড়ে ৮টায় চাঁদড়া ঘাটে এসে ভিড়ে বন্ধু সংঘ বোয়ালমারীর নৌবহর। সেখান থেকে ইজিবাইকে করে বোয়ালমারী চৌরাস্তায় এসে শেষ হয় নৌবিহারের কার্যক্রম।
সংবর্ধিত জাহিদুল হক পল্লব বলেন, বোয়ালমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকমন্ডলী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সাথে নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়া রোধে কাজ করবো এবং বিদ্যালয়কে আনন্দ নিকেতনে পরিণত করবো। বন্ধু সংঘ বোয়ালমারীর পক্ষ থেকে আমাকে সংবর্ধিত করায় বন্ধু সংঘকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
সংবর্ধিত বিপ্লব কুমার রায় বলেন, আমি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়াতে বন্ধু সংঘ বোয়ালমারী আমাকে সংবর্ধিত করে যে সম্মান ও ভালোবাসা দিয়েছে তা আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমি বন্ধু সংঘের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি ও আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন। বন্ধু সংঘ নামের এই সংগঠন দৃঢ়ভাবে সুসংগঠিত হোক এবং বন্ধুদেরও এলাকার নিপীড়িত মানুষের পাশে তাদের সেবা প্রদান করে যাক এই কামনা করছি।
বন্ধু সংঘের সভাপতি সরোয়ার হোসেন চৌধুরী দুলু বলেন, আমাদের দুই কৃর্তিমান বন্ধু জাহিদুল হক পল্লব বোয়ালমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় ও অ্যাড. বিপ্লব কুমার রায় সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ায় বন্ধু সংঘ বোয়ালমারী আনন্দিত ও গর্বিত। আমরা তাদের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি। বন্ধু সংঘের যেসকল বন্ধুরা নৌবিহারে যোগ দিয়ে নৌবিহারকে সাফল্যমন্ডিত করেছের তাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। ভবিষ্যতে বন্ধু সংঘের কর্মসূচি যাতে সফল হয় এবং আমরা যেনো নিপীড়িত বন্ধু ও হতদরিদ্র মানুষের পাশে থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারি সে জন্য বন্ধু সংঘের সকল সদস্যের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন।
বন্ধু সংঘ বোয়ালমারীর নৌবিহারে অংশগ্রহণ করেন উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য অ্যাড. বিপ্লব কুমার রায়, মো. শফিকুল ইসলাম তপন, বন্ধু সংঘ বোয়ালমারীর সভাপতি সরোয়ার হোসেন চৌধুরী দুলু, সহসভাপতি মহিদুল ইসলাম মহু, প্রণব রায়, সাজ্জাদ রহমান লাবলু, সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুল হক পল্লব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাফিজুর রশিদ লুলু, একে আজাদ মুক্ত মিয়া, মো. বাদশা মোল্যা, সৈয়দ এনামুল এহসান, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল ইসলাম, মো. মতিয়ার রহমান, সৈয়দ জামিরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মো. লিটন সিকদার, সহপ্রচার সম্পাদক মো. সেলিম রেজা, কোষাধ্যক্ষ মো. চুন্নু শেখ, দপ্তর সম্পাদক মো. খায়রুল ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক মো. আশরাফুজ্জামান চুন্নু, সহক্রীড়া সম্পাদক মো. মিরাজ মিয়া, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. শিবনাথ দাস মানিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ধৃতিরঞ্জন রায়, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. মাসুদ রানা, কার্যনির্বাহী সদস্য শ্রীধাম করসহ প্রায় অর্ধশত বন্ধু।
প্রকাশক ও সম্পাদক : অ্যাডভোকেট কোরবান আলী
Copyright © 2025 Boalmari Barta. All rights reserved.