বোয়ালমারী প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে নূপুর আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূ খুন হওয়ার ঘটনায় পুলিশ স্বামী মুসা মোল্যা (৩৫)কে গ্রেফতার করেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে বোয়ালমারী থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. আবদুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুর নামক স্থান থেকে শনিবার সকালে মুসাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত মুসাকে ওইদিন বোয়ালমারী থানায় এনে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রবিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে ফরিদপুর বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে খুনের ওই ঘটনায় নিহতের মা পারভীন আক্তার বাদি হয়ে দুইজনকে আসামী করে বোয়ালমারী থানায় রবিবার একটি মামলা করেছেন। মামলা নং-২৩। হত্যাকারী স্বামী মুসা মোল্যাকে মামলার এক নম্বর আসামী করা হয়েছে। অপর আসামী হলেন নিহতের প্রেমিক নাঈম মোল্যা। আটককৃত মুসার দেয়া তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি পার্শ্ববর্তী একটি ঝোঁপ থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছে। বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। উল্লেখ্য, নূপুর আক্তার যখন বোয়ালমারী উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত উপজেলা প্রি-ক্যাডেট স্কুলে ৫ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিলেন, তখন মুসা মোল্যার দ্বারা গর্ভবতী হয়ে পড়েন। এলাকাবাসীর চাপে পরবর্তীতে উভয় পরিবার তাদের বিয়ে দেন। গত বছর দুয়েক যাবত নূপুর একই এলাকার রিজাউল মোল্যার ছেলে নাঈম মোল্যা ওরফে লাদেনের (২২) সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। নাঈম বোয়ালমারী পৌরসভার একটি দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কর্মরত। গত এক বছরে নূপুর আক্তার তিনবার নাঈমের সাথে চলে যান, আবার ফিরে আসেন। নাঈমের সাথে তার বিয়েও হয় বলে এলাকাবাসী জানান। গত ৭ অক্টোবর এ নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে এক সালিশ বসে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় আগামী তিন মাস নূপুর আক্তার নিজ বাড়িতে থাকবেন, মুসা কিংবা নাঈম কারো সাথেই যোগাযোগ রাখতে পারবেন না। তিন মাস পর নূপুর তার সিদ্ধান্ত জানাবেন যে তিনি কার সাথে সংসার করবেন। সে মোতাবেক সালিশদাররা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবেন। কিন্ত নাঈম বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে নানার বাড়ি মায়ের সাথে দেখা করতে এসেছে- মেয়ে ফারিয়ার এমন ফোন পেয়ে মুসা নূপুরের নানা বাড়ি যান। এ সময় নাঈম পালিয়ে গেলেও উত্তেজিত মুসা হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে নূপুরকে মেয়ের সামনেই এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করেন। পরে নূপুরকে উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে ঢাকায় নেওয়ার পথে ভোর ৪টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর মৃত্যু হয় নূপুরের। ঘটনার পর থেকে নাঈম পলাতক রয়েছে। এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার অফিসার ইন চার্জ মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার এক নম্বর আসামী মুসা মোল্যাকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামী নাঈমকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক : অ্যাডভোকেট কোরবান আলী
Copyright © 2025 Boalmari Barta. All rights reserved.