সাইফুল ইসলাম মারুফ : ফরিদপুরের সালথায় মিম আক্তার (১৬) নামের এক কলেজ ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ সাদিক মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) দিনগত রাতে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের ছোট বালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মিম ওই গ্রামের আফছার মাতুব্বরের মেয়ে ও সরকারি সালথা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বলে জানা যায়। প্রেমঘটিত কারণে এ আত্মহত্যা বলে নিহত পরিবারের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে।
মিমের বাবা আফছার মাতুব্বর বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে আমি ও আমার স্ত্রী বাড়ির পাশে একটি মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানে যাই। মিলাদে যাওয়ার পর একটা ছেলে আমাকে ফোন করে বলে, আপনি তারাতারি বাড়িতে যান। বাড়ি গিয়ে দেখেন আপনার মেয়ের কি অবস্থা তা দেখেন। আমি স্ত্রীকে নিয়ে দ্রæত বাড়িতে এসে দেখি আমার মেয়ে ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে। এরপর থেকে ওই ছেলের ফোন বন্ধ। তবে তার ছবি রয়েছে আমার মেয়ের মোবাইলে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নেওয়ার সময় মেয়ের ফোনও নিয়ে গেছে। আমাদের ধারনা ওই ছেলের সঙ্গে আমার মেয়ের সম্পর্ক ছিল। ঘটনার আগে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওই ছেলের সঙ্গে আমার মেয়ের ঝগড়া হয়। পরে অভিমান করে আমার একমাত্র মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আমি ওই ছেলের সন্ধান চাই। পাশিপাশি ওর বিচার চাই। আমি গরীব মানুষ। তারপরেও মেয়েটা নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। ওকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে চেয়েছিলাম।
মিমের মা মোছা: নাজমা বেগম বলেন, আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। এক ছেলে বিয়ে করে আলাদা সংসার করছে। আরেক ছেলে ছোট। আর একমাত্র মেয়ে মিমকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল আমাদের। ওকে উচ্চশিক্ষা দিয়ে ভাল একটা চাকরী দিতে না পারলেও ভাল একটা চাকরীজীবী ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। সেই স্বপ্ন আজ মাটির নিচে চলে গেল। মিমের চাচা উকিল মাতুব্বর বলেন, মিমের সঙ্গে একটা ছেলে প্রেম সম্পর্ক ছিল। ধারনা করছি- ওই ছেলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে রাগারাগি করে আত্মহত্যা করেছে মিম।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সাদিক বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিমের বাবা-মা একটি মিলাদ মাহফিলে যান। বাড়িতে তাদের মেয়ে সালথা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মিম একা ছিল। মিমের সঙ্গে একটা ছেলের সম্পর্ক রয়েছে। রাতে ওই ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে বলতে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয় বলে শুনেছি। পরে মিম ঘরের ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মিমের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক : অ্যাডভোকেট কোরবান আলী
Copyright © 2025 Boalmari Barta. All rights reserved.