আজ বোয়ালমারী হাসপাতালে নার্সের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ। অভিযোগ অবিশ্বাস করার মত কিছু দেখছি না। কিছুদিন আগের কথা, ভাগ্নি হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালিন অসুস্থতা হঠাৎ বেড়ে গেল। আমার বোন উপায়ান্তর না পেয়ে ছুটে গেলেন নার্সের কাছে। আরামে ব্যাঘাত ঘটবে বলে বসেই রইলেন নার্স। বোন দ্বিতীয়বার অনুরোধ করার পর আমার বোনের উপর ক্ষেপে গেলেন নার্স । বাচ্চা অসুস্থতো আমার কাছে কেন? নিচে ডাক্তার আছে ওখানে যান!"নিয়ম হলো কোন রোগীর সমস্যা হলে নার্স গিয়ে ডাক্তারকে ইনফর্ম করবে, ডাক্তার স্ব শরীরে রোগীর কাছে এসে রোগীকে দেখবেন।কিন্ত ঘটলো তার উল্টো। উপায়ান্তর না পেয়ে এত রাতে সেই তিনতলা থেকে ভাগ্নিকে কোলে করে নিচতলায় এলো। ডাক্তার ভাগ্নিকে দেখার আগে প্রেশক্রিপশন ফাইল চাইলেন। আবার উপরে উঠলো বোন,প্রেসক্রিপশন ফাইল গচ্ছিত থাকে নার্সের রুমে। ফাইল চাইলে আবারও খিচিয়ে উঠলেন। আপনার ফাইল পাহারা দেয়ার জন্য এখানে বসেছি?? ফাইল দেয়া যাবেনা, ডাক্তাররে বলেন ফাইল নাই!! বোন আবার নিচে নেমে আসলো, এই হাসপাতালে যতগুলো নার্স আছে তার অধিক সংখ্যকের পরিচয় মানুষের বাচ্চা হলেও, অন্তরদৃষ্টিতে অধিকাংশই অমানুষের বাচ্চা বলেই আমার মনে হয়েছে। ভাগ্নিকে যে ডাক্তারের তত্বাবধানে ভর্তি করা হয়েছিল ভর্তির পর তার দেখা পাওয়া গেল মাত্র একদিন। জরুরী কোন সমস্যা হলে নার্স ডাকা ছাড়া উপায় নাই। আমার বোন যখনই নার্সের কাছে গিয়ে সহযোগীতা চেয়েছে ততবারই কুকুরের মত আচরনে চিল্লাচিল্লি করে বোনকে তাড়িয়ে দিয়েছে নার্স। বাচ্চার অবস্থা ভাল না একটু আসেন এমন জবাবে শুনতে হয়েছেএই মহিলাতো ফাজিল মহিলা, আপনার বাচ্চার অবস্থা ভাল নাতো আমি কি করবো? চিৎকার চেচামেচি ছাড়া ওনার মুখে একটি বারের জন্যও সহযোগীতার বানি শোনা যায়নি, স্যালাইনের নল খুলতে সহায়তা কিংবা ইনজেকশন পুশ করতে বলা হলেও একই আচরনে বের করে দেয়া হয়েছে, নার্স ব্যাস্ত তার মোবাইল নিয়ে। রোগীর স্বজন মানেই উটকো ঝামেলা। হাসপাতালে এইসব জানোয়ার সুলভ আচরন করা ব্যাক্তিদের শাস্তি দিতে রাখা হয়েছে অভিযোগ বক্স, তাতে কেউ অভিযোগ জমা দেয়না, কার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেবে? কতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেবে?? এখানের সুইপার থেকে শুরু করে নার্স ইনচার্জ পর্যন্ত বেশীরভাগই দায়িত্বহীন এবং জঘন্য আচরনের অধিকারী। দু একজন সেবা যা পায় তা স্থানীয় লোকজনদের অনুরোধ কিংবা হস্তক্ষেপ থাকে বলে। আচ্ছা,রোগীর সাথে অভদ্র আচরন, অসহযোগীতা করার জন্য এদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া যায়না? যদি দেয়া যায় তাহলে সিস্টেমটা বলেন, হাসপাতালে পড়ে থাকা কাঠের বাক্সে অভিযোগ কেউ পড়বে না, পড়লেও ব্যবস্থা নেয়ার মত লোক পাওয়া মুশকিল। আমাদের কাজ আমাদেরই করতে হবে। নিন্মোক্ত ছবিতে যে মানুষটাকে দেখছেন, এত এত অন্যায়ের ভিড়েও সর্বপ্রথম জরুরী বিভাগে এই মানুষটাকে পেয়েছিলাম,মানুষ হিসাবে যথেষ্ট আন্তরিক এবং মিষ্টভাষি ছিল সে। ডাক্তার তারিকুল ইসলাম নাদিমকে রাত সাড়ে এগারোটায়ও জরুরী বিভাগে যেভাবে সেবা দিতে দেখোছি, ঠান্ডা মাথায় ঠান্ডা মেজাজে, তাতে মনে হয়েছে এত এত আগাছা দিয়ে হাসপাতাল ভর্তি না করে নাদিমের মত কয়েকজন লোক থাকলেই হাসপাতালে থাকা রোগীরা নতুন করে আশার আলো দেখবে। প্লিজ কর্তৃপক্ষ, বেয়াদব নার্স ঠেকান, তারিকুল ইসলাম নাদিমের মত কিছু মানুষকে আনুন। আমরা হাসপাতালে বেড়াতে যাইনা, চরম অসহয় না হলে কেউই হাসপাতালে যায়না।
লেখক জাহাঙ্গীর
প্রকাশক ও সম্পাদক : অ্যাডভোকেট কোরবান আলী
Copyright © 2025 Boalmari Barta. All rights reserved.