বোয়ালমারী প্রতিনিধিঃ মাদক ও মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়ায় এবং সমাজ সংস্কারে ভূমিকা রাখায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দেলোয়ার হেসেন। দুর্বৃত্তদের হামলায় মারাত্মক আহত হয়ে বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। জানা যায়, ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী জনপদকে মাদক, সন্ত্রাস ও অবক্ষয় মুক্ত করার জোর প্রচেষ্টা চালানোর ফলে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, শিক্ষানুরাগী, আমানা গ্রুপের পরিচালক, কাদিরদী দ্বি-মুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেনের প্রাণনাশের লক্ষ্যে অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলা চালায় ৩০/৪০ জনের একটি দুর্বৃত্ত দল। শুক্রবার ২১ এপ্রিল রাতে সাড়ে দশটার দিকে কাদিরদী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী, সাতৈর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাফিউল আলম মিন্টু জানান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. দেলোয়ার হোসেন কাদিরদী বাজারস্থ একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান, জেলার সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফকির মো. বেলায়াত হোসেন, মধুখালী উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সামছুল আলম বাচ্চু, শাহজাহান বিশ্বাস, কানাইলাল দাশ, মোতালেব বিশ্বাস, ছত্তার বিশ্বাসসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ঈদ পুর্ববর্তী সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। বৈঠক শেষে অতিথিদের বিদায় জানানো কালীন মো. দেলোয়ার হোসেনের উপর দুর্বৃত্তরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। সন্ত্রাসীগণ এ ব্যবসায়ীর প্রাণনাশের লক্ষ্যে তার মাথা হাতসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে তাকে মারাত্মক জখম করে। এ সময় আমিসহ আগত অতিথি ও স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাই, সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার পিএএ ও জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, পিপিএম সেবা'র সার্বিক সহযোগিতায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে চিকিৎসকগণ। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মাথা ও হাতে দুটি অস্ত্রোপচার শেষে বর্তমানে তিনি চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেনের ঘনিষ্ঠ ইলিয়াস হোসেন জানান, কাদিরদী উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচিত হবার পর থেকেই দেলোয়ার হোসেন বিদ্যালয়টির শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করতে নানা পদক্ষেপের পাশাপাশি কঠোর নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে বিদ্যালয়টি পরিচালনা করে আসছে, সেই সাথে জনপদটিতে মাদক, ইভটিজিং, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের শেকড় উৎপীড়নে নিজে ও প্রশাসনের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে। যার ফলে এ সবের সাথে সম্পৃক্ত গোষ্ঠি দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের ভেতরে পুষে রাখা পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতেই তার উপর হামলা চালায়। ইলিয়াস হোসেন আরও জানান, দেলোয়ার হোসেন সমাজ সংস্কারে একনিষ্ঠ ও শক্ত অবস্থানে থাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ অসামাজিক কাজে জড়িত একশ্রেণির মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছিল। তারা পরিকল্পিত ভাবে তাদের পথের বাধা সড়াতে ষড়যন্ত্র করে এসেছে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই ব্যবসায়ীর বৃদ্ধা মাতা গতকাল শুক্রবার বাড়ির পাশে একটি পুকুরে গোসল করতে গেলে উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির ৪/৫ জন কিশোর তাকে উত্যক্ত করে, এ সময় তিনি প্রতিবাদ করলে দেলোয়ার হেসেনের মাকে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করে তারা। এ নিয়ে দেলোয়ার হোসেন পুলিশের সহায়তা নিলে ঘটনার সাথে জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় স্থানীয় চেয়ারম্যান রাফিউল আলম মিন্টুর মধ্যস্থতায় বিষয়টি মিমাংসা হলেও এ ঘটনার সূত্রপাত ধরে হামলা চালায় দুর্বৃত্তদল। বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন - সমাজের নীতিনির্ধারক অনেক সম্মানিত ব্যক্তি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে হামলাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক : অ্যাডভোকেট কোরবান আলী
Copyright © 2025 Boalmari Barta. All rights reserved.