বোয়ালমারী প্রতিনিধি: বিদেশ থেকে পাঠানো টাকার হিসাব চাওয়ায় ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ইরান ফেরত প্রবাসী ছোট ভাইকে হত্যার চেষ্টা ও তার নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার লুটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক পাষন্ড বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে। উপজেলার শেখর ইউনিয়নের রাখালতলী গ্রাম নিবাসী ঐ বড় ভাইয়ের নাম মোঃ সিরাজুল ইসলাম। এ ঘটনায় গুরুত্বর আহত ছোট ভাই মোঃ মিরাজ হোসেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানাগেছে।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানায় দায়ের করা এজাহার ও ভুক্তভোগীর ভিডিও বক্তব্যের সূত্রে জানাযায়,রাখালতলী গ্রামের মৃত শহিদ শেখের দুই পুত্র সিরাজ শেখ ও মিরাজ শেখ। প্রায় ১৫ বছর আগে নিঃসন্তান স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে বিদেশে পাড়ি জমান মিরাজ। ভাগ্য বদলাবার নেশায় প্রথমে দুবাই এরপর লিবিয়া, আফগানিস্তান,তুরস্ক,ইরাক সহ আরো কয়েক দেশ ঘুরে থিতু হন ইরানে গিয়ে। এক পর্যায়ে অনেক টাকা-পয়সার মালিক হলেও প্রবাসে থেকেই মা ও স্ত্রীকে হারান মিরাজ শেখ। অল্প বয়সেই মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ জনিত কারণে মারা যান স্ত্রী শিউলী আক্তার। নিঃসন্তান বাবা মিরাজের বাড়িতে অভিভাবক বা আপনজন বলতে ছিলেন বড় ভাই সিরাজ ও তার পরিবারে সদস্যরা। ফলে বিদেশে উপার্জিত সমুদয় টাকা-পয়সা ভাই-ভাবীর নামে পাঠান মিরাজ শেখ। তার হিসাব মতে এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধকোটি টাকা তিনি তাদের কাছে পাঠিয়েছেন। গেলো জুন মাসের মাঝামাঝিতে দেশে ফেরেন মিরাজ শেখ। সঙ্গে আনেন বেশ কিছু নগদ টাকা ও পাঁচ ভরী স্বর্ণালংকার। ভাই-ভাবী ও তাদের সন্তানদের জন্যও আনেন নামি-দামি সব পণ্য-সামগ্রী। কিন্তু দু-একদিন পর বড় ভাইয়ের কাছে যখন বিদেশ থেকে পাঠানো টাকার হিসাব চান মিরাজ তখনই শুরু হয় বিরোধ। হিসাবে বড় রকমের গড়মিল পাওয়ায় বড় ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে মিরাজের। এতে এক পর্যায়ে প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন সিরাজ শেখ ও তার স্ত্রী ইসমত আরা। তারা মিরাজকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিয়ে তার নগদ অর্থ, সোনা সহ সকল সহায়-সম্পদ আত্মসাতের পরিকল্পনা আটেন। পরিশেষে গত ২৭ জুলাই গভীর রাতে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেন অভিযুক্তরা। কৌশলে ঘুমন্ত মিরাজের ঘরে প্রবেশ করে তাকে হত্যার চেষ্টা করেন বড় ভাই, ভাবী ও তাদের ছেলে হাসিব শেখ। হাত-পা চেপে ধরে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাস রোধে মিরাজকে হত্যার চেষ্টা চালান অভিযুক্তরা। প্রচন্ড ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তাদের হত্যা মিশন ব্যার্থ হলে অভিযুক্তরা মিরাজকে বেধড়ক মারধর করে গুরুত্বর আহত করে তার সাইড ব্যাগের ভিতর থেকে নগদ টাকা ও পাঁচ ভরী স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ভোরবেলা প্রতিবেশীরা মুমূর্ষু অবস্থায় মিরাজকে উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। মিরাজ শেখ বলেন,ওরা আমার অনেক টাকা মেরে দিয়েছে। পৃথিবীতে আমি এখন একা। আমার কোন উত্তর সূরী বা ওয়ারিশ নেই। তাই ওরা আমায় হত্যা করে আমার সব সম্পদ গ্রাস করতে চায়। এব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সিরাজ শেখ বলেন,একটা ভুল বুঝাবুঝির সূত্র ধরে ভাই-ভাই একটু ঝামেলা হয়েছে। এটা একান্তই আমাদের পারিবারীক বিষয়।এর বাইরে তেমন কিছু হয়ওনি, বলারও কিছু নেই।
প্রকাশক ও সম্পাদক : অ্যাডভোকেট কোরবান আলী
Copyright © 2025 Boalmari Barta. All rights reserved.