
বোয়ালমারী প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এক আদম ব্যবসায়ীর নিকট পাওনা টাকা দাবি করায় ওই আদম ব্যবসায়ী সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালিয়েছে ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের উপর। হামলায় অশীতিপর বৃদ্ধসহ ভুক্তভোগী দুই সহোদর মারাত্মক আহত হয়েছেন। শুধু হামলা করেই খ্যান্ত হোন নাই তারা, উল্টো মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করে চলছে অসহায় পরিবার ও তাদের রক্ষা করতে আসা প্রতিবেশীেদর। পাওনা টাকা দাবি করায় হামলা, মিথ্যা মামলা ও প্রতারণার শিকার হওয়ার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওমান ফেরত প্রবাসী ভুক্তভোগী আজগর শেখ ও তার পরিবার। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকালে ভুক্তভোগী আজগর শেখ উপজেলার চতুল ইউনিয়নের পোয়াইল গ্রামের নিজ বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী আজগর শেখ। লিখিত বক্তব্য থেকে জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের পোয়াইল গ্রামের ইউনুচ শেখের ছেলে আজগর শেখ (৩৫) এবং বাদশা শেখের ছেলে আদম বয়বসায়ী শাহিন শেখ (২৮) সম্পর্কে আপন চাচাতো ভাই। শাহিন শেখ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান থাকাকালীন আজগর শেখকে সাড়ে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে ভালো বেতনের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওমানে নিয়ে যান। সেখানে থাকাকালীন আজগর শেখের আকামা (কাজের অনুমতি পত্র) শেষ হয়ে গেলে শাহিন শেখ আকামার মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে তার নিকট থেকে তিন লাখ টাকা নেন। কিন্তু শাহিন শেখ আকামার মেয়াদ বাড়িয়ে দিতে না পারায় অবৈধ ভাবে কাজ করতে হয় আজগর শেখকে। এছাড়া শাহিন শেখের অধীনে কাজ করার কারণে বেতন বাবদ আজগর শেখের এক লাখ টাকা পাওনা হয়। আকামা বা কাজের অনুমতিপত্র না থাকায় অবৈধ ভাবে কাজ করার সময় ওমান পুলিশ আজগর শেখকে আটক করে। সেখানে একমাস কারাবন্দী থেকে দেশে ফিরেন সে। এর কিছুদিন পর শাহিন শেখও দেশে ফিরে আসেন। শাহিন শেখ দেশে ফিরলে আকামা করতে দেওয়া ও বেতন বাবদ পাওনা চার লাখ টাকা দাবি করে আজগর শেখ। শাহিন শেখ প্রথমে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও ফেরত দিতে গড়িমসি করে। গত ৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় আজগর শেখ- শাহিনের নিকট টাকা দাবি করলে সে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে দুজনে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাদের নিবৃত করে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। পরে শাহিন শেখ, তার তিন ভাই ইশারত শেখ, সাজ্জাত শেখ, মুশা শেখ ও তাদের বাবা বাদশা শেখ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আজগর শেখের বাড়িতে এসে হামলা চালায়। এতে ভুক্তভোগী আজগর শেখসহ তার পিতা ইউনুচ শেখ, ভাই মোহাম্মাদ আলহাজ, স্ত্রী মোছা. মুনজিলা মারাত্মক আহত হন। এসময় প্রতিবেশী গ্রাম্য মাতুব্বর মো. আক্কেল মোল্যা ও তার দুইভাই শামচু ও নাসির এগিয়ে এসে দুই পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা চালায়। আহত আজগর ও তার ভাই পাল্টা আক্রমণ করতে উদ্যত হলে স্থানীয়দের বাধার মুখে পিছু হটে তারা। পরে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার কথা বলেন স্থানীয়রা। কিন্তু ওই দিনই রাতেই ভুক্তভোগী আজগরের চাচা প্রতিপক্ষ মো. বাদশা শেখ বাদি হয়ে বোয়ালমারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে গ্রামটির বিএনপি নেতা মো. আক্কেল মোল্যা, তার ভাই মো. শামচু মোল্যা, নাসির মোল্যা ও ভুক্তভোগী আজগর শেখের নামোল্লেখ করে ও ২/৩ জনকে অজ্ঞাত আসামী দেখিয়ে বোয়ালমারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আজগর শেখ দাবি করেন- আমাদের বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও সাজানো। আমার টাকা না দেওয়ার জন্য মিথ্যা মামলা করে আমাদের হয়রানি করছে। আমি পুলিশ ও প্রশাসনের নিকট সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের জোর দাবি জানাচ্ছি।
আজগর শেখের উপর হামলায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রতিপক্ষ শাহিন শেখ, তার তিন ভাই ইশারত শেখ, সাজ্জাত শেখ, মুশা শেখ ও তাদের বাবা বাদশা শেখের নাম উল্লেখ করে বোয়ালমারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান।