দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে করে দলগোছানো ও যুগপৎ আন্দোলনের চিন্তাভাবনা করছে বিএনপি।
এ লক্ষ্যে বিশ্বস্ত, ত্যাগী ও সাহসী নেতা-কর্মীদের নেতৃত্বে এনে দলকে তৃণমূল থেকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিলেও বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির দ্বিধাবিভক্তি চরম আকার ধারণ করেছে।
২০১৭ খ্রীস্টাব্দে দলটির উপজেলা সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের মৃত্যুর পরে থেকেই অনেকটা নেতৃত্বহীনতায় ভুগছে উপজেলার তৃণমূলের সমর্থকেরা, দ্বিধাবিভক্ত উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা প্রচণ্ড অগোছালো। সেই সাথে নেতৃত্বদানকারী দুই নেতার নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে বিরাজমান বিশৃঙ্খলা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় বিএনপি নেতারা তা স্বীকার করতে না চাইলেও সাম্প্রতিককালে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করায় তাদের মধ্যে তৃণমূল পর্যন্ত দ্বন্দ্ব-কোন্দল, বহুধাবিভক্তি শাখা প্রশাখায় বিস্তার লাভ করেছে তা প্রতিভাত হয়ে প্রকাশ পেয়েছে।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এ অঞ্চলে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে এলে অন্য দলের বিজয় অধরা থেকে গেছে বরাবরই। সেই ক্ষেত্রে এ এলাকাকে আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি বলা চলে। এ অঞ্চলে আওয়ামী লীগের জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে প্রায় ডজনখানেক নেতা রয়েছে যারা জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন, এদিকে বিএনপিতে রয়েছেন মাত্র দুজন। দলের থেকে তাদের ব্যক্তিগত ইমেজ – ভোট ও নেতৃত্বের বড় সহায়ক ভূমিকা পালন করলেও আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটিতে আঘাত হানতে যে ধরনের শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলা উচিত তার ছিটেফোঁটাও দলটির মধ্যে নেই।
পর্যবেক্ষকগণ মনে করেন উপজেলাটিতে একদিকে নেতৃত্বদানকারীদের ভুল সিদ্ধান্ত, অন্যদিকে তাদের দলের চেয়ে কোটারি স্বার্থচিন্তা ঐক্যের পরিবর্তে বিভেদ বাড়াচ্ছে; যা দলটিকে ক্রমাগত বিপর্যয়ের দিকেই ঠেলে দিচ্ছে। রাজনৈতিক দলের সুসময়-দুঃসময় অত্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপার। বলা নিষ্প্রয়োজন, বিএনপির এখন দুঃসময় চলছে। তবে সে দুঃসময় কাটিয়ে ওঠার জন্য যে প্রয়াস-প্রচেষ্টা প্রয়োজন, নেতৃত্বদানকারী নেতারা তা দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যেই উপজেলা বিএনপির বিভক্ত দুইটি কমিটির সভাপতি-সম্পাদক নিয়ে একটি জরিপ চালাচ্ছে কেউ কেউ। তাতে নেতাকর্মীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ-অনুযোগের কাদা ছোড়াছুড়িতে নিজেদের ঐক্যের ফাটল প্রকটভাবে ধরা দিলেও নির্বিকার রয়েছেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
শোনা যাচ্ছে বোয়ালমারীতে ২৩ জুন শুক্রবার স্থানীয় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মী সমাবেশ করতে চায় জেলা বিএনপি।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ঐক্যবদ্ধ বিএনপির স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে। দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি এই চরম সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলায় আলো দেখাবে কে? প্রশ্ন তৃণমূলের সমর্থকদের।
Leave a Reply