#ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে একটি বেসরকারী নার্সিং ইনস্টিটিউটে বেআইনিভাবে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ভবন মালিকের বিরুদ্ধে। স্থানীয় চৌরাস্তাস্থ খান প্লাজায় অবস্থিত প্রফেসর ডাঃ গোলাম কবির ইনস্টিটিউট ও কলেজ নামে ঐ প্রতিষ্ঠানটিতে শুক্রবার রাতে তালা ঝুলিয়ে দেন ভবন মালিক সালমা খান। ধারের টাকা চাওয়া নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়ায় এর অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে জানাগেছে। এ ঘটনায় বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডাঃ মোঃ গোলাম কবির। লিখিত অভিযোগ, শিক্ষার্থী ও প্রত্যাক্ষদর্শীদের সূত্রে জানাযায়,২০১৯ সালে খান প্লাজার চতুর্থ তলার পুরো ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে সেখানে একটি নার্সিং ইনস্টিটিউট গড়ে তোলেন অর্থপেডিক্সের খ্যাতিমান চিকিৎসক ডাঃ গোলাম কবির। মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাড়ার চুক্তিতে ৭ বছরের জন্য ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন তিনি। প্রতিষ্ঠার পর প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে সুন্দর ভাবে যাত্রা শুরু করে ইনস্টিটিউটটি। কিন্তু বছর তিনেক যেতে না যেতেই চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত ভাড়ার দাবীতে ডাঃ গোলাম কবিরের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ান ভবন মালিক সালমা খান। এ নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে একাধিক সালিশ বৈঠক সহ আদালতে উভয় পক্ষের একাধীক মামলা চলমান রয়েছে জানাযায়। কিন্তু আদালতের রায়ের অপেক্ষা না করে সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে শুক্রবার (৭ জুলাই) সরকারী বন্ধের সুযোগ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন ভবন মালিক সালমা খান। ইনস্টিটিউট ও কলেজের শিক্ষার্থীরা জানায়,শুক্রবার প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তারা বৃহস্পতিবার বিকালে নিজ নিজ হোস্টেল ও বাড়িতে চলে যান। শনিবার সকালে তারা কলেজে ফিরে দেখতে পায় মূল গেইটে বড় দুটি তালা ঝুলছে। শিক্ষার্থীরা কলেজে ঢুকতে না পেরে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। প্রতিষ্ঠান মালিক ডাঃ গোলাম কবির তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিদের অবহিত করার পাশাপাশি স্থানীয় থানায় ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ইনস্টিটিউটের তিন বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্সের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী পপি মধু চরম হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, সামনে আমার ফাইনাল পরিক্ষা।এই মুহূর্তে প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে আমরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পরবো। সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আমাদের অনুরোধ আমাদের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে তারা যেন একটু সদয় হন। প্রফেসর ডাঃ গোলাম কবির নার্সিং ইনস্টিটিউট এন্ড কলেজ এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ডাঃ গোলাম কবির বলেন,দুই লক্ষ টাকা অগ্রীম দিয়ে সাত বছরের জন্য ভবনটির পুরো চার তলা আমি ভাড়া নিয়েছি। এরপর সেখানে ১০ লক্ষ টাকার অবকাঠামো এবং ১৩ লক্ষ টাকা ব্যায়ে লিপ্ট স্থাপন করেছি। এর মধ্যে ৫ লক্ষ টাকা পরবর্তী এক বছরের মধ্যে নগদ পরিশোধ করার কথা থাকলেও তা করেনি। বাকি ৮ লক্ষ টাকার ব্যংক সুদ সহ মোট ১১ লক্ষ টাকা মাসিক ভাড়া থেকে পরিশোধ করা হচ্ছে। এ হিসাবে সামনের আরো ১৫ মাসের ভাড়া তাকে অগ্রীম দেয়া রয়েছে। তা সত্ত্বেও ভবন মালিক সালমা খান বেআইনি ভাবে চুক্তির বাইরে গিয়ে অতিরিক্ত দুই, তিনগুন বেশী ভাড়া দাবী করছে। এটা মেনে না নেওয়ায় সালমা আমাকে ঘর থেকে নামিয়ে দিতে ষড়যন্ত্র করছে। অবৈধ ভাবে আমার কলেজে তালা দিয়েছে। কিন্তু ইচ্ছা করলেই কি একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরিয়ে ফেলা যায়? এ ব্যাপারে ভবন মালিক সালমা খান বলেন,কলেজে তালা দেয়ার ব্যাপারে আমি কিছু জানিনা।তবে আমার বিল্ডিং এর কাছে কেউ যেন না যায়। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলারা আক্তার বলেন,ডাঃ গোলাম কবিরের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আদালতে উভয় পক্ষের মামলা চলমান থাকা অবস্থায় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া মোটেও ঠিক হয়নি। আইনগত ভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।
Leave a Reply