অ্যাড. কোরবান আলী: সোমবার ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় চতুল উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের মধ্যে কয়েকটি পুরস্কার বিতরণ করে ফিরে আসি বোয়ালমারী চৌরাস্তায়। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম রাব্বানী সোহেল ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জালাল উদ্দীন ও আমি গাড়ি থেকে নেমে যে যার গন্তব্যে যেতে না যেতেই ফোন আসে সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল মান্নান মোল্যার স্ট্রোক হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সে ফরিদপুর নিয়ে যাচ্ছি। তাৎক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্সে চেপে ফরিদপুরের নিলটুলির স্পন্দন ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেন্ট সেন্টারে পৌছে যাই। প্রচন্ড রকমের ভীড় ঠেলে ডা. কামাল উদ্দিন আহমেদের চেম্বারে যেতে চেষ্টা করি। রোগীদের চাপাচাপি ও চেম্বারে কর্মরত কর্মচারিদের প্রবল আপত্তি ভেতরে যাওয়া যাবে না। আমার একটি ভিডিটিং কার্ড তাদের হাতে দিয়ে ডাক্তার সাহেবকে পৌছে দিতে বলি। কার্ডটি পাওয়ার সাথে সাথেই ভেতরে ডেকে নিয়ে রোগীর অবস্থা জেনে নিজের চেম্বার থেকে বের হয়ে রোগীকে দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ইতোমধ্যেই বিশেষ ব্যবস্থায় রোগী পৌছে যায় তার কাছে। ধৈর্য্যসহকারে সবকিছু শুনে অতিদ্রুত একটি টেস্ট করে বলেন, হার্টের কোনো সমস্যা নেই। তবে পেশারে সমস্যা আছে। অন্য কোথাও নিতে হবে। পাশ থেকে আমাদেরই একজন হাজার টাকার একটি নোট বের দিলে তিনি পুরো টাকাই ফেরত দিয়ে বলেন, ‘ভাই বোয়ালমারী আমার এলাকা থেকে এসেছেন, অনেকদিন দেখা সাক্ষাৎ হয় না। বিশেষ একটি জটিল অবস্থায় আপনার সাথে দেখা। আপনাদের আপ্যায়ন করতে পারলাম না। তারপর টাকা নেয়াটা বড় বেমানান।’ ঘটনাটি জেনে দেখে তার ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে আমাদের সাথে যাওয়া সকলেই বললেন, ডাক্তার হলে এরকমই হতে হয়। এলাকার মানুষ কাছে পেলে অনেকেই খুশি হন আবার অনেকেই বিব্রতবোধ করেন। এ রকম অনেক উদাহরণ বোয়ালমারী অনেকের ক্ষেত্রেই আছে। তবে অনেক অনেক ধন্যবাদ ডা. কামাল উদ্দিন আহমেদকে। যতদূর জানি, তার স্ত্রী, তার বড়ভাই ডাক্তার গিয়াস উদ্দিন আহমেদ এবং তার ভাবী সকলেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। স্ব স্ব পেশায় তারা সকলেই উজ্জল নক্ষত্র। তাদের আচার ব্যবহার অনেকের জন্য অনুকরণীয়।
Leave a Reply