1. boalmari@gmail.com : Korban Ali : Korban Ali
  2. boalmaribartabd@gmail.com : administrator : Hasan Mahmud Milu
  3. boalmaribarta@gmail.com : Kurban Ali : Kurban Ali
  4. jmitsolution24@gmail.com : support :
শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ০১:১৯ পূর্বাহ্ন

কৈলাস থেকে মর্ত্যে আগমনীর সুর

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২১
  • ৫৪৪ Time View

বিপ্লব সাহা মুন্না :
উৎসবপ্রেমী বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় পার্বণ দুর্গাপূজা। অশুভ, অন্যায়, পাপ, পঙ্কিলতার বিরুদ্ধে ন্যায়, পূর্ণ, সত্য ও সুন্দরের যুদ্ধ দুর্গাপূজা। তিনি দুর্গতি নাশ করেন বলে তাঁকে দুর্গা বলা হয়। মার্কন্ডেয় পুরাণ মতে তিনি দুর্গম নামক অসুরকে নাশ করেছেন এজন্য তাঁর নাম দুর্গা। হিন্দু শাস্ত্রমতে দেবী দুর্গা অসুর বধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতি বছর শরৎকালে কৈলাস ছেড়ে কন্যারূপে মর্ত্যলোকে আসেন। দেবী দুর্গা তাঁর সন্তান-কার্তিক, গণেশ, লক্ষী এবং সরস্বতীকে সঙ্গে নিয়ে পিতৃগৃহে কাটিয়ে আবার ফিরে যান দেবালয়ে। প্রতিবছর আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষে বাঙালি হিন্দুরা দুঃখ, কষ্ট ভুলে মেতে উঠেন উৎসবে, আনন্দে।

৬ অক্টোবর মহালয়ের মাধ্যমে পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে শুরু হয়েছে দেবীপক্ষের বা শারদোৎসবের আনুষ্ঠিকতা। ষষ্ঠী থেকে দশমী পাঁচ দিনের এ উৎসব শেষ হবে ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। পূজার দিনগুলোতে ঢাকের বাদ্যে মুখরিত থাকবে পূজামন্ডপ গুলো। মাঙ্গলিক শঙ্খ ধ্বনি, কুলবধুদের উলুধ্বনি, ঢাক, কাঁসর ও ঘন্টার ঐক্যতানের মধ্যে পুরোহিতের মন্ত্র ও শ্রী শ্রী চন্ডী থেকে পাঠের মাধ্যমে করা হবে দেবী দুর্গার পূজা-অর্চনা। বৈদিক শাস্ত্রীয়ভাবে মা দুর্গা পূজিতা হন ষোড়শ উপাচারে। পঞ্জিকা অনুযায়ী এ বছর দোলায় চড়ে মর্ত্যলোক থেকে আবার কৈলাসে ফিরে যাবেন মা দুর্গা।
দুর্গাপূজায় বিজয়া দশমীর দিনে দেবী দুর্গার চরণে ভক্তি নিবেদন শেষে মন্ডপে মন্ডপে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন বাঙালি হিন্দু নারীরা। সিঁদুর খেলা বিজয়া দশমীর এক বিশেষ অনুষ্ঠান। সধবা নারীরা এদিন একে অপরের সিঁথিতে, গালে, কপালে সিঁদুর পরিয়ে একে অপরের জন্য মঙ্গল কামনা করেন। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে শ্রীকৃষ্ণকে দুর্গাপূজার প্রবর্তক বলা হয়। সৃষ্টির প্রথমে শ্রীকৃষ্ণ বৈকুন্ঠে প্রথম দুর্গাপূজা করেন। মা দুর্গা শত্রু বিনাশে যেমন ভয়ঙ্করী আবার ভক্ত বা সন্তানের কাছে তিনি তেমনি স্নেহময়ী জননী, কল্যান প্রদায়িনী। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়-“ডান হাতে তোর খড়গ জ্বলে বাঁ হাত করে শঙ্কা হরণ, দুই নয়নে স্নেহের হাসি ললাট নেত্র আগুণবরণ”। পুরাণ মতে ত্রেতাযুগে লঙ্কাপতি রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করার জন্য শরৎকালে রাজা রামচন্দ্র ১০৮টি নীলপদ্ম দিয়ে দুর্গাপূজা করে দেবী দুর্গাকে তুষ্ট করেছিলেন। সেই থেকে শরৎকালে দুর্গা পূজার প্রচলন হয়। এ কারনে শারদোৎসবের আরেক নাম অকালবোধন। শারদোৎসব বাঙালি হিন্দুর ঐতিহ্য ও পরম্পরা বহন করে চলছে।
দুর্গোৎসবের একটি বড় অঙ্গ হচ্ছে কুমারী পূজা। অষ্টমী মহাতিথিতে কুমারী পূজা হয়ে থাকে। কুমারী পূজার দার্শনিক তত্ত্ব হলো- নারীতে পরমার্থ দর্শন ও পরমার্থ অর্জন। নারী ভোগ্যা নয়, পূজ্যা। কুমারী দেবী দুর্গার স্বাত্ত্বিক রূপ। কুমারী আদ্যাশক্তি , মহামায়ার প্রতীক। মুলতঃ নারীকে যথাযথ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করতেই শারদীয়া দুর্গাপূজায় কুমারী পূজার আয়োজন করা হয়। আদিকালে দুর্গা পূজায় কুমারী পূজার প্রচলন থাকলেও পরবর্তীতে কুমারী পূজা বন্ধ হয়ে যায়। স্বামী বিবেকানন্দ মাতৃজাতির মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় ১৯০১ সালে বেলুড়মঠে শ্রীরামকৃষ্ণ ও মা সারদা দেবীর অনুমতিক্রমে কুমারী পূজার পূনঃ প্রচলন করেন।
মা দুর্গা জগজ্জননী। তিনি দশভুজা। দশ হাত দিয়ে তিনি তাঁর ভক্তদের রক্ষা করেন। পৃথিবীর সবার দুঃখ, দুর্দশা ও হতাশা লাঘব করে বিশ্বের বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। জগজ্জননী মা দুর্গার আগমনে সবার দুঃখ, কষ্ট, হিংসা, বিদ্বেষ দূর হোক এবং পরাজিত হোক সব অসুর শক্তির। সবখানে ছড়িয়ে পড়ুক শান্তি ও সুখের বার্তা। শুভ শারদীয়া।
লেখক : জেনারেল ম্যানেজার , টোটাল গ্রুপ, ঢাকা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022
Design & Development by : JM IT SOLUTION