বোয়ালমারী প্রতিনিধি: বোয়ালমারীতে ডিবি পরিচয়ে সায়েদুল হক (২৫) নামের একজন ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর ইনজেকশন দিয়ে বাকশক্তিহীন করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সায়েদুল হক বোয়ালমারীর গুনবহা ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের গুনবহা গ্রামের বাসিন্দা মৃত আব্দুল হান্নান মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় সোমবার (১০ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে বোয়ালমারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার ভগ্নিপতি মুহাম্মাদ ওয়াজেদ আলী খান।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে ওই ব্যবসায়ী মুক্তি পেয়ে মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে ফিরে আসে। পরে তাকে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। জানা যায়, সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার পৌর সদরের অগ্রণী ব্যাংকের সামনে থেকে অপহরণের শিকার হন সায়েদুল হক।
সায়েদুল হকের ভাই এস এম রহমতুল্লাহর ভাষ্যমতে, ব্যাংকের সামনে থেকে ডিবি পরিচয়ে তার ভাইকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় দুষ্কৃতকারীরা। সারাদিন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর রাত ১১টার দিকে অপহরণকারীরা সাইয়েদুল হকের ফেসবুক মেসেঞ্জার থেকে তার ছোট বোন শামিমা জামানের মেসেঞ্জারে একটি মেসেজ পাঠান। সেখানে বলা হয়, তাকে আমরা ডিবি পরিচয়ে তুলে এনেছি। আমাদের সঙ্গে তার ঝামেলা আছে। তাকে শিক্ষা দেবো। ও আমাদের সঙ্গে অনেক বেয়াদবি করেছে। মেসেঞ্জারে আরও বলা হয়, ‘মুক্তিপণের টাকার জন্য বা মুক্তিপণের জন্য না, ওকে মারবো। ওর সঙ্গে আমাদের পুরাতন হিসাব বাকি আছে। আমাদের একজনকে পুলিশের কাছে ধরায় দিছে। ওর গলায় ১০টা ইনজেকশন দেবো যাতে আর কোনোদিন কথা বলতে না পারে। ইনজেকশন দেওয়া হলে ছেড়ে দেবো যে কোনো জায়গায়।’ এর একঘণ্টা পর রাত ১২টা ২ মিনিটে আরেকটি মেসেজ আসে। সেখানে বলা হয়, ‘কাজ শেষ। ছেড়ে দিচ্ছি। সবকিছুই ঠিক থাকবে। কিন্তু কথা বলতে পারবে না।’
এস এম রহমতুল্লাহ বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় উপজেলার তেলজুড়ী এলাকা থেকে ভ্যানযোগে বাড়িতে পৌঁছান সায়েদুল হক। তিনি এখন কোনো কথা বলতে পারছেন না। কাগজে লিখে তথ্য দিচ্ছেন। এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শাকিলা জামান বলেন, তিনি মুখে কিছুই বলতে পারছেন না। কাগজে লিখে জানান, কোন ওষুধ শরীরে দিলে বিষ হয়ে যাবে। হাতের ইশারায় জানান, গলায় ইনজেকশন পুশ করা হয়েছে। এ অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
বোয়ালমারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আক্কাস আলী বলেন, সাধারণ ডায়েরি করার পর ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হয়েছে। পরে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত ও অবস্থান জানার চেষ্টা চালানো হয়। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে হাজির হন।
এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধারের বিষয়টি জানতে পেরেছি। বিস্তারিত পরে জানানো যাবে।
Leave a Reply