হাসান মাহমুদ মিলু : বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি এবং অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. লিয়াকত সিকদার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নষ্ট করার অপচেষ্টা করা হয়েছিল। অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধামুক্ত, সোনার বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন সে স্বপ্ন থেকে আমাদের দূরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রক্ষা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তাদের চাকুরি দেওয়া হয়েছিল, ব্যবসা করার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। বেগম জিয়া তাদের পুরস্কৃত করেছিলেন। খুনিদের রক্ষার জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে জাতিকে কলংকিত করা হয়েছিলো।’
তিনি আরো বলেন, ‘উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে বেকার সমস্যার সমাধান হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কোন ষড়যন্ত্রে কাজ হবে না। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোন ষড়যন্ত্রকারী সফল হবে না। এজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এই আসন থেকে যেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবে তাকেই আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে বিজয়ী করবো।’
জাতির জনকের শাহাদাত বার্ষিকী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন প্রচার উপলক্ষে শুক্রবার (১১ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টায় ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের দাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন।
লিয়াকত সিকদার আরো বলেন, ‘আজকের ছেলেমেয়েরা জানে না ১৫ বছর আগে আমাদের কত কষ্ট ছিলো। এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না, রাস্তাঘাট ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের জন্য প্রত্যেকটি এলাকায় উন্নয়ন হয়েছে। বাংলাদেশে আর কেউ না খেয়ে থাকবে না। এজন্য আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।’
এ সময় লিয়াকত সিকদার বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র মানুষের সামনে তুলে ধরে বলেন, ‘উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও নৌকায় ভোট দিতে হবে। কারণ আওয়ামী লীগ মানেই উন্নয়ন। শেখ হাসিনা মানেই উন্নয়ন। পদ্মা সেতু হয়েছে। এখন আমাদের এ অঞ্চলে শিল্প বিপ্লব হবে।’
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. লিয়াকত সিকদার বলেন, ‘দেশের জনগণ আজ বিভিন্ন ধরনের কার্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার মাথা থেকে ভিজিডি কার্ড, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা- এসব কর্মসূচির ধারণা এসেছে। আজ সারা বিশ্ব এসব কর্মসূচি অনুকরণ করছে।’
আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বোয়ালমারী পৌর আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য রাহাদুল আকতার তপন বলেন, ‘লিয়াকত সিকদারের একটাই গুণ- তিনি দেন, কখনো নেন না। যদি লিয়াকত সিকদার উন্নয়নের সুযোগ পান তবে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এই এলাকার উন্নয়ন করা হবে। লিয়াকত সিকদারের পক্ষে সবাইকে গণজাগরণ সৃষ্টি করতে হবে।
রাহাদুল আকতার তপন আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হবে, ফরিদপুরের উন্নয়ন হবে। এজন্য আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে, শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী করতে হবে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে হবে।’
দাদপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম ভুলুর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দাদপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান হাই, অ্যাডভোকেট বিপ্লব রায়, কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের প্রভাষক জাহিদুল হক পল্লব, লিটন সিকদার, শফিউল আলম টুলু, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের বোয়ালমারী উপজেলা শাখার সভাপতি মোল্যা আশিক, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, পারভেজ প্রমুখ।
পরে রাত সাড়ে ৯টায় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত সিকদার ময়না ইউনিয়নের ময়না গ্রামের পলাশ বিশ্বাসের বাড়িতে অনুষ্ঠিত নামযজ্ঞ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন। সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িক দেশ গঠনের জন্য হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন সবধর্মের মানুষ প্রাণ দিয়েছিলেন। আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম অসাম্প্রদায়িক বাঙালি চেতনার। কিন্তু জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনিরা আমাদের সে স্বপ্ন থেকে দূরে নিয়ে গিয়েছিলেন।’ ভক্তবৃন্দের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘এদেশ আমার, এদেশ আপনার, এদেশ আপনার পূর্ব পুরুষদের, এদেশ আপনার সন্তানদের। এদেশে সবার সমান অধিকার রয়েছে। সবাই নির্ভয়ে নির্বিঘ্নে যার যার ধর্ম পালন করবে।’
Leave a Reply