বোয়ালমারী প্রতিনিধি: বোয়ালমারী উপজেলা থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে একমাত্র বিজয়ী শেখর ইউপি চেয়ারম্যান, ফ্যাসিবাদ স্বৈরাশাসক শেখ হাসিনার এজেন্ট কামাল আহমেদের ক্ষমতার অপব্যবহার, জুলুম, নির্যাতন, অপকর্ম, চাঁদাবাজি, মাদক বাণিজ্য ও ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেছে এলাকাবাসী।
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের আমলে তার বিভিন্ন অপকর্ম আড়াল করতে সম্প্রতি জামায়াত বিএনপির কতিপয় নেতার সাথে আঁতাত করে বিএনপি নেতা, শেখর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রইসুল ইসলাম পলাশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছেন তিনি। এই মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে শুক্রবার (১ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বড়গা নতুন বাজারে এই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করে স্থানীয় জাতীয়তাবাদী দলের সমর্থকরা।
সভায় বক্তারা দাবি করেন, নৌকা প্রতিকের এই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে। যার মধ্যে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানিমুলক মামলা-হামলা, জুলুম-নির্যাতন, হুমকি-ধমকি, দুঃস্থদের চাউল আত্মসাৎ, ইউনিয়ন পরিষদের আসা সেবাপ্রত্যাশিদের হয়রানি ও সালিশ বৈঠকের নামে চাঁদাবাজি। তার ছত্রছায়ায় ইউনিয়নটির প্রায় প্রতিটি গ্রামেই গড়ে উঠেছে মাদকের অভয়ারণ্য। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করলেই তার নিজস্ব হেলমেট বাহিনী দিয়ে সাধারণ মানুষের উপর চালিয়েছেন অমানসিক জুলুম নির্যাতন। কামাল চেয়ারম্যান নিজেই এ সন্ত্রাসী বাহিনীর নেতৃত্ব দেন। ক্ষমতার অপব্যবহার ও কালো টাকার প্রভাব খাটিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা ছিল তার বাম হাতের খেল। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যত্থানে সরকারের পট পরিবর্তনের পর ভোল পাল্টিয়ে বর্তমানে জামায়াত-বিএনপির শুভাকাঙ্খী সাজার চেষ্টা করছেন এই চতুর আওয়ামীলীগ নেতা। নিজেকে রক্ষায় কামাল আহমেদের দ্বিচারিতার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছেন শেখর ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামের মানুষ।
শেখর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও ইউপি সদস্য মো. বরকত মোল্যার সভাপতিত্বে ও ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি নাজমুল হাসানের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ফরিদপুর ১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী বোয়ালমারী সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বোয়ালমারী পৌর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন কালা মিয়া, উপজেলা যুবদলের সাবেক আহবায়ক নাজিমুদ্দিন মিয়া মিলু, বিএনপি নেতা মফিজুর কাদের খান মিল্টন, শেখর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রইসুল ইসলাম পলাশ, বিএনপি নেতা মো. এনায়েত হোসেন, সাবেক কাউন্সিলর শেখ আতিকুল আলী, সাবেক কাউন্সিলর মো. ফরিদ আহমেদ, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মো. রোকনুজ্জামান মিয়া বকুল, উপজেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমেদ, জাসাস সভাপতি মো. শাহিন আনোয়ার, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক হোসেন সালেহ্ রুবেল, পৌর ছাত্রদলের আহবায়ক মো. মাহফুজ মিয়া, শেখর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. কুদ্দুস শেখ, বিএনপি নেতা আকরাম শরীফ, আকতার শেখ, কমল সেন, নিরু মিয়া, টোকন শেখ, কামরুল মোল্যা, ইয়াসিন ফকির, লিটন মাস্টার, আতিয়ার শেখ, ওহিদুর ফকিরসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
সভায় বক্তারা বলেন, ‘আমরা শুনেছি, ফেনীতে জয়নাল হাজেরী, নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমানের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অনেক গল্প। তাদের আওয়ামী প্রেতাত্মা কামাল আহমেদ আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছিল। কালো টাকা ও আওয়ামীলীগের নমিনেশন বাগিয়ে এনে প্রশাসনকে ব্যবহার করে জাল ভোটে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। চেয়ারম্যান হয়ে এমন কোনো অপকর্ম নাই যা তিনি করেননি। ডিবি’র অতিরিক্ত কমিশনার হারুনের ছত্রছায়ায় থেকে দিনের পর দিন এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে গেছেন। তার এই অপকর্ম ঢাকতে বিএনপি থেকে ৬বার বহিষ্কৃত নেতা খন্দকার নাসিরের সাথে আঁতাত করে বিএনপিতে যোগদানের পায়তারা চালাচ্ছে সে। বিগত কয়েক বছর আওয়ামী সন্ত্রাসী কামাল চেয়ারম্যান বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর যে জুলুম অত্যাচার চালিয়েছে এখন থেকে তার সমুচিত জবাব দেয়া হবে। কালো টাকার বিনিময়ে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করে বিএনপিতে ঠাই দিলে তৃণমুলের নেতাকর্মীরা তা কোনোদিনই মেনে নিবে না। বিএনপিকে বাঁচাতে প্রয়োজনে খন্দকার নাসিরের বিরুদ্ধেও আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানের সঠিক বিচার না হলে উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মান্নান মাতুব্বরের মতো তারও করুণ পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে বলে হুশিয়ারী জানান বক্তারা।
সভায় বক্তারা আরো বলেন, রইসুল ইসলাম পলাশের জনপ্রিয়তায় কামাল আহমেদ ও তার দোসররা বুঝে গেছে আগামী ইউপি নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হবে। যে কারণে জামায়াত খেলাফত মজলিস ও বিএনপির কতিপয় নেতাকে দিয়ে তার নিজবাড়িতে বৈঠক করে অপপ্রচার চালাচ্ছে তিনি। এ সময় সভায় উপস্থিত হাজারো নেতাকর্মী বিএনপির মুলধারায় নেতৃত্বদানকারী শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু’র পাশে থেকে দলকে সুসংগঠিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ হন এবং কামাল আহমেদের বিচারের দাবি করেন।