বোয়ালমারী প্রতিনিধি: ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় যুবদল নেতা পরিচয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। উপজেলার ফলিয়া গ্রামর ওই ব্যক্তির নাম মোঃ ইমরুল হাসান। তিনি ওই গ্রামের আবু বক্কার মোল্লার ছেলে ও আলফাডাঙ্গা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক পদে রয়েছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, স্থানীয় বারাশিয়া নদের তীরে গড়ে উঠেছে ফলিয়া নতুন বাজার। এর অধিকাংশ জমিই পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন। এই বাজারের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে প্রায় দুই শতাংশ জায়গা কোন প্রকার বন্দোবস্ত না নিয়েই সম্পূর্ণ গায়ের জোরে দখল করে সেখানে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন ইমরুল হাসান। ইতিমধ্যে তিনি আরসিসি বাউন্ডারির মাধ্যমে জমিটির চারপাশ ঘিরে ভরাটের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। আর এ নিয়েই এলাকায় শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। নানা জল্পনা-কল্পনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক সূত্র জানায়, ইমরুল আলফাডাঙ্গা যুবদলের প্রভাবশালী নেতা। দল ক্ষমতায় না এলেও এলাকায় তিনি এখন সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তি। দাপট দেখিয়ে তিনি ঐ দুই শতক জমি দখল করে নিয়েছেন। সাংবাদিক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন, জনপ্রতিনিধি কাউকেই ইমরুল হাসান পাত্তা দিচ্ছেন না বলে দাবী সূত্র গুলোর। মুঠোফোনে সাংবাদিক পরিচয় জেনেই অনেকটা তেতে উঠেন ইমরুল। রুক্ষ মেজাজে তিনি বলেন, আপনি সাংবাদিক, আর আমি উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক। বলেন, কি বলতে চান? ওয়াপদার জায়গা দখল সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব ছোট-খাটো বিষয় নিয়ে আপনারা কেন এলাকায় আসেন? কে ফোন করে আপনাদের আসতে বলেছে তার নাম-পরিচয় জানতে দেন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, পিছনের জায়গা আমার। সামনের সামান্য পরিমান জমি আছে ওয়াপদার। এর জন্য অনুমতির প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। আপনারা এখন যান, পরে এসে চা খেয়ে যাবেন।
এ ব্যাপারে আলফাডাঙ্গা উপজেলা যুবদলের আহবায়ক শাহিন আহমেদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ইমরুল হাসান যুবদলের নেতা ঠিক আছে। কিন্তু তাকে তো দল এমন আকাম-কুকাম করতে বলেনি।দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ অপরাধ করলে তা বরদাস্ত করা হবে না। ইমরুল অন্যায় করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান শাহিন আহমেদ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান খসরু বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে দলের যে যত বড় নেতাই হোন না কেন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে দখলবাজি, চাঁদাবাজি করলে রেহায় নেই। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ইমরুল হাসানের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যোগাযোগ করা হলে বোয়ালমারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা বলেন, ঘটনা আলফাডাঙ্গা উপজেলার হলেও আমাদের বোয়ালমারী উপজেলার বেশী নিকটবর্তী। তাছাড়া আলফাডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যক্রমও বোয়ালমারী অফিস থেকে পরিচালিত হয়। তাই খবর পেয়ে লোক পাঠিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে বলে ছিলাম। কিন্তু ইমরুল হাসান আমার স্টাফের সঙ্গে দূর্ব্যবহার করেছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে।
আলফাডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মিঠুন হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি অবহিত নই। দ্রুত সরেজমিন গিয়ে সরকারি সম্পদ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply