1. boalmari@gmail.com : Korban Ali : Korban Ali
  2. boalmaribartabd@gmail.com : administrator : Hasan Mahmud Milu
  3. boalmaribarta@gmail.com : Kurban Ali : Kurban Ali
  4. jmitsolution24@gmail.com : support :
সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ০৩:৪৮ অপরাহ্ন

বোয়ালমারীতে জলাতঙ্ক রোগ নির্মূলে কুকুরের টিকাদান

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৮২২ Time View

বোয়ালমারী প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫ দিন এলাকার সকল পথ কুকুর, বেওয়ারিশ কুকুর ও পালিত কুকুরকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে। বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে টিকা প্রদান করতে উপজেলার সকলকে আহ্বান জানানো হয়েছে। পৌরসভায় প্রতিদিন ৫টি টিম এবং প্রতিটি ইউনিয়নে ২টি করে মোট ২৭টি টিম একযোগে এই টিকাদান কর্মসূচিতে কাজ করবে। প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ কাজ চলবে। মোট ৫ দিনে ১৬শ থেকে সাড়ে ১৬শ কুকুরকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ১২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সম্মেলন কক্ষে এক অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সভাপতিত্বে করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এমএম নাহিদ আল রাকিব। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রাসেল রেজা। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ‍উপজেলা নির্বাহী অফিসার পক্ষে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. কারিজুল ইসলাম, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু আহাদ মিয়া, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. নারায়ণ চন্দ্র সরকার, ভেটেনারী সার্জন ডা. মো. আব্দুল আলীম, এসআই আক্কাস আলী, ঘোষপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইমরান হোসেন নবাব, গুনবহা ইউপি চেয়ারম্যানের পক্ষে ইউপি সদস্য মো. এনায়েত হোসেন, প্রেসক্লাব বোয়ালমারী সভাপতি, বোয়ালমারী বার্তা সম্পাদক ও প্রকাশক অ্যাড. কোরবান আলী, আবাসিক মেডিকেল অফিসার কেএম মাহমুদ রহমান প্রমুখ। উপস্থাপনা ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিডিসির প্রোগ্রাম সুপারভাইজার মো. শরিফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, জলাতঙ্ক একটি ভয়ংকর মরণব্যাধি, এ রোগে মৃত্যুর হার শতভাগ। পৃথিবীতে প্রতি বছরে প্রায় ৫৯ হাজার মানুষ জলাতঙ্ক রোগে মারা যায়। জলাতঙ্ক রোগটি মূলত কুকুরের কামড় বা আচড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। এছাড়াও বিড়াল, শিয়াল, বেজী, বানরের কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমেও এ রোগ হতে পারে। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৪ থেকে ৫ লক্ষ মানুষ কুকুর, বিড়াল, শিয়ালের কামড় বা আঁচড়ের শিকার হয়ে থাকে, যাদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। এ ছাড়াও প্রায় ২৫ হাজার গবাদি প্রাণী এ রোগের শিকার হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ২০১০ সালের আগে প্রতি বছর প্রায় ২০০০ মানুষ জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যেত এবং গবাদি প্রাণীর মৃত্যুর সঠিক পরিসংখ্যান অজানা হলেও একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গবাদি প্রাণী এ রোগে মারা যায় । ২০১৬ সালের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা শতকরা ৯০ ভাগ কমিয়ে আনা এবং ২০৩০ ইং সালের মধ্যে বাংলাদেশকে জলাতঙ্ক মুক্ত করার লক্ষ্যে ২০১০ইং সাল থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে জাতীয় জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ এবং নির্মূল কর্মসূচি বাস্তবায়ন চলছে। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশের সকল জেলা সদর হাসপাতাল, বিআইটিআইডি হাসপাতাল, চট্টগ্রাম ও সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকার ৫টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কামরাঙ্গীরচর ৩১ শয্যা হাসপাতাল ছাড়াও ৩৩৮ টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জলাতঙ্ক প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত ব্যক্তির আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ, আক্রান্ত স্থান ধৌতকরণে প্রয়োজনীয় সাবান ও পানি সরবরাহ এবং বিনামূল্যে ৩ ভোজ (০, ৩ ও ৭ দিনে) Inj. Anti-Rabies Vaccine (ARV) এবং কামড়ের ক্যাটাগরি নির্ধারণ পূর্বক Inj. Rabies Immunoglobulin (RIG) প্রদান করে হচ্ছে। ঢাকা জেলার মহাখালীতে অবস্থিত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাতীয় জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল কেন্দ্র “সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল” এ প্রতিদিন প্রায় ৪০০-৫০০ কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রোগীকে সেবা প্রদান করা হয়। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার উদ্যোগে ২০১১ ইং সাল থেকে সারাদেশে ব্যাপকহারে কুকুরের টিকাদান কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এসকল কার্যক্রমের পাশাপাশি জলাতঙ্ক রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম ও দিবস উদযাপনের মাধ্যমে অবহিতকরণ কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে। এছাড়াও অপরিকল্পিতভাবে কুকুর নিধন রোধ করার লক্ষ্যে পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশনের মেয়রগণের সাথে সমঝোতার স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে। এ ছাড়াও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন এবং বিভিন্ন এনজিও-এর সম্মিলিত উদ্যোগে বাংলাদেশ থেকে জলাতঙ্ক নির্মূলের
লক্ষ্যে একসাথে কাজ করে যাচ্ছে।
গত কয়েক বছরের গৃহীত কার্যক্রমের ধারাবাহিকতার ফলে বাংলাদেশে জলাতঙ্কের সংখ্যা হ্রাস পেতে শুরু করেছে। সংক্রামক হাসপাতালের বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে ২০১০ইং সাল থেকে ২০১২ইং সাল পর্যন্ত সারাদেশে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২১৪৭ থেকে ১৪৪৫-এ নেমে এসেছে এবং সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালেও এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা পূর্বের তুলনায় অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, মহাখালী; বিআইটিআইডি হাসপাতাল, চট্টগ্রাম ও জেলা সদর হাসপাতালের প্রাপ্ত তথ্যে ২০০৯ সালের পূর্বেও জলাতঙ্কজনিত মৃত্যুর সংখ্যা আনুমানিক ২০০০ এর অধিক ছিল যা বর্তমানে ২০২২ সালে জলাতঙ্কে মৃত্যুর সংখ্যা কমে ৪৫ এ নেমে আসে। বর্তমানে চলমান এসকল কার্যক্রমের পাশাপাশি কুকুরের কামড়ের আধুনিক ব্যবস্থাপনা চালু রেখে ব্যাপকহারে কুকুরের টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের সকল কুকুরকে ৩ রাউন্ড টিকা প্রদান করা গেলে ইস্পিত লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালেয়র উদ্যোগে দেশ ব্যাপী ব্যাপকহারে কুকুরের জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকাদান (এমডিডি) কার্যক্রমের আওতায় এ পর্যন্ত দেশের ৬৪টি জেলার সকল উপজেলায় ১৯ রাউন্ড, ৩৫টি জেলার সকল উপজেলায় ২য় রাউন্ড এবং ৮ টি জেলার সকল উপজেলায় ৩য় রাউন্ড টিকাদান কার্যক্রমের আওতায় প্রায় ২৭ লক্ষ ৩৯ হাজার ভোজ জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা কুকুরকে প্রদান করা হয়েছে ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022
Design & Development by : JM IT SOLUTION