বোয়ালমারী প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে রাতের আঁধারে বর্বরচিত সন্ত্রাসী হামলায় একই পরিবারের আপন তিন সহোদর মারাত্মক আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন-মোঃ ওবায়দুর প্রামাণিক, ইমামুল প্রামাণিক ও আতাউর প্রামাণিক। এদের মধ্যে ইমামুল প্রামাণিক ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে বলে জানা গেছে। গ্রাম্য দলাদলিকে কেন্দ্র করে পূর্ব বিরোধের জেরে সম্প্রতি উপজেলার চতুল ইউনিয়নের শুবদেবনগর গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গ্রামের দুটি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ইতিপূর্বে এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে একাধিকবার পাল্টা-পাল্টি হামলা, ভাংচুর ও মারপিটের ঘটে। এরই ধারাবাহিকতায় গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমান প্রামাণিকের তিন ছেলে উক্ত ওবায়দুর, ইমামুল ও আতাউর পূর্ব পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। আহত ওবায়দুর প্রামাণিক বলেন, ঘটনার দিন রাত আনুমানিক ৯ টার দিকে তারা তিন ভাই একসঙ্গে স্থানীয় বাইখীর চৌরাস্তা থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে তারা নিজ গ্রামের রোকন শেখের বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছলে সেখানে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা রুহুল মোল্লা, দুলাল খান, গফফার শেখ, সাইফুল খান, ইদ্রিস খান গং এর নেতৃত্বাধীন ৩০/৩৫ জনের একদল লোক দেশীয় নানা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা তিন সহোদর ওবায়দুর, ইমামুল ও আতাউরকে এলোপাথাড়ী কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে এলাকাবাসী ও স্বজনরা মুমূর্ষু অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এদের মধ্যে এক ভাই ইমামুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও চিরতরে পঙ্গু হয়ে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় স্থানীয় বোয়ালমারী থানায় ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত নামা আরো ১০/১৫ জনসহ মোট ৪৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আহত আতাউর প্রামাণিক বলেন, আমি ঢাকায় চাকরি করি। এলাকার কোন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নই। তারপরও ওদের হাত থেকে আমি রেহাই পেলাম না। বাড়িতে বেড়াতে এসে ওদের নৃশংসতার শিকার হলাম। আমার দুটি হাতই দূর্বৃত্তরা ভেঙ্গে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমার ভাইয়েরাও গ্রামের কোন দাঙ্গা-হাঙ্গামার সঙ্গে যুক্ত নন। তাদের অপরাধ একটাই, তারা এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটুর সঙ্গে দল করেন। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, আসামীরা বর্তমানে দুর্দণ্ড প্রতাপশালী। তাদের হাতেই এখন এলাকার নিয়ন্ত্রণ। ফলে তারা যা ইচ্ছে তাই করেছে। তাদের হামলার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগে গ্রামের সামচু শেখ, ইউনুস শেখ, কামাল শেখ, আজগর শেখ, ওবায়দুর শেখসহ আরো অনেকে বিবাদীদের নৃশংস হামলার শিকার হয়েছে বলে জানায় সূত্রগুলো। অপরদিকে বিবাদী দুলাল খান বলেন, আমি কোন গন্ডগোল-ফ্যাসাদের সঙ্গে জড়িত নই। একসঙ্গে মিলেমিশে থাকার কারণে আসামি হয়েছি। আজ যারা নালিশ করছেন অতীতে তারাই আগে জুলুম-অত্যাচার করেছেন বলে দাবী দুলাল খানের।
Leave a Reply